সকল প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁরই সাহায্য চাই, তাঁর কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করি, এবং আমরা আমাদের স্বীয় নফসের ক্ষতি ও বদ আমল থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। যাকে তিনি হেদায়েত করেন তাকে কেউ গোমরাহ করতে পারে না এবং যাকে তিনি গোমরাহ করেন কেউ তাকে হেদায়েত করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ যার ইবাদতের যোগ্য কোন ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরিক নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ সা: তাঁর বান্দা ও রাসূল।
শুরু করছি:
আমার মুসলিম উম্মাহ: আমার এই কথাগুলো আপনাদের জন্য, আর পবিত্র ভূমিতে আমাদের পরিবার গুলোকে বাঁচানোর জন্য যা অবশ্য কর্তব্য তার আকুতি থেকে লেখা, কারণ আমরা ইতমধ্যেই তাদের সাহায্যার্থে অনেক দেরী করে ফেলেছি, ফলশ্রুতিতে আমাদের করণীয়গুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে, হয়ে পড়েছে আরও কষ্টসাধ্য এবং জটিল।
আর কতদিন ফিলিস্তিনে আমাদের পরিবারগুলো ভয়-ভীতির মধ্যে বসবাস করবে যখন আমরা নিরাপদে ঘুমুতে যাই যে নিরাপত্তাবোধ অনেকাংশেই মিথ্যা এবং অস্থায়ী? আর কতদিন গাজা অধিবাসী অবরোধের বেড়াজালে আটকে থাকবে যখন আমরা বর্তমান সময়ের জন্য হলেও আরাম-আয়েশ ও বিলাস-ব্যাসনে মত্ত হয়ে আছি? আর কতকাল আমরা নিষ্ক্রিয় বসে থাকব যখন তাদের সন্তানদের জন্য তাদের হৃদয় পুড়ছে, আরব সরকারদের সহযোগীতার আঁতাতে যাদের হোয়াইট ফসফরাস বোম দিয়ে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, যার ভয়াবহতা ও ব্যাপকতা অবলোকন করে অনেক সাহসী বিক্রমশালী পুরুষের চোখেও পানি ঝরেছে। এর ব্যাপকতা নিয়ে দেয়া হাজারো ভাষণের চেয়ে তাদের কান্না অনেক বেশি আবেগী এবং ভাব প্রকাশে সক্ষম।
অতি আপনজনের কাছ থেকে পাওয়া ছুরির আঘাত তো আরও ভয়ঙ্কর
একজন মানুষের জন্য তরবারীর আঘাতের চেয়েও
এই বিষয়টি এখন আর অবাক করে না যে, আমাদের কিছু মা বা বোনেরা গাজাতে মৃত্যু বরণ করেছেন বা মৃতপ্রায়, বুলেট বা বোমের আঘাতে নয়, অবরোধের কারণেও নয়, কারণ বাচ্চারা যদি অবরোধের এই পাশেই থাকে তবে তা কোন সমস্যা নয়; কিন্তু সমস্যা তখনই হয় যখন অবরোধ সেদিনই হয় যেদিন সে হারিয়ে গেছে। আর একজন মায়ের কাছে বাদশাহ এবং তার সমস্ত বাদশাহী সম্পদও তার নিজের ছোট্ট সন্তানের তুলনায় কিছুই নয়, কিন্তু ইহুদিদের হাতের আমেরিকান বিমানগুলো বারংবার বোমা বর্ষণ করে যেতেই থাকে, আর আশেপাশের ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের কোমল প্রাণ ছিনিয়ে নিতে থাকে; এটাই আমাদের মা বোনদের ভয়ার্ত করে তুলে, প্রতি নি:শ্বাসে তারা মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করে। শোনা কখনই দেখার সমতুল্য নয়, আর একমাত্র সেই এই ব্যাথ্যা অনুধাবন করতে পারবে যার ছোট্ট সোনার টুকরাকে এভাবে তার কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, আর একমাত্র সেই অনুভব করতে পারবে বোমা বর্ষণ কি জিনিস যে কখনও তার শিকার হয়েছে; আর জালিমদের থেকে প্রতিশোধ নেবার কোন মু’তাসিম নেই।
এটা অবশ্যই
আমাদের পরিষ্কার করা উচিত যে, যারা এই হত্যাযজ্ঞের জন্য একত্রিত হয়েছে তাদের ‘গাজা হোপ’-এর নামে প্রশংসা করা নি:সন্দেহে
একটি মানস্তাত্বিক পরাজয় এবং দ্বীন, উম্মাহ ও শহীদানের রক্তের
প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা যেখানে এর সম্ভ্রান্ত অধিবাসীরাই দ্ব্যার্থহীন ভাবে তা
অস্বিকার করে আসছে।
গাজার যুবকেরা মৃত্যুবরণ করেছে যেন গাজা বেঁচে থাকে
আর যারা বেঁচে আছে তারা তো কুফ্ফারদের প্রশংসা শুনে প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে
লোকেরা তো তাদের বর্শায় ভর করেই মুক্তি পেয়েছিল
কাজেই বর্শার ভয় দিখেয়ে কিভাবে তাদের দাস বানিয়ে রাখা যাবে?
আর তারা তোমাদের যে দু:খ কষ্টের মধ্যে ফেলেছে
তা আমার হৃদয়ে গভীর ক্ষত হয়ে আছে
মজলুমদের মতো আর কেউই দ্বীনকে আঁকড়ে ধরে রক্ষা করে না
অন্য কেউই এমনভাবে অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করে না, নাগালও পায় না
যারা ক্ষমতার মসনদে তারা এই কারণগুলো বিক্রয় করে দিয়েছে
আর কুফ্ফারদের গোলামে পরিণত হয়েছে
আর যারা তোমার সন্তানদের তোমাদের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে
তার হৃদয় আর পাষাণে কি কোন পার্থক্য আছে?
আমাদের শাসকদের হৃদয়ও তো আমাদের শত্রুদেরই মতো
হোক না তা নাজদ বা মিশর, তারা কখনই নম্র নয়
সময়ের পরিক্রমায় ফেরাউনরা আবার ফিরেছে
আরব সন্তানদের অপমানিত করতে আর দাসত্বের শৃঙ্খলে বাঁধার মানসে
তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের শত্রুদের সাহায্য করছ
তাই তোমাদের গর্দানে আঘাত করা এখন আমার দ্বীনি কর্তব্য
আমার মুসলিম উম্মাহ: ফিলিস্তিন অবরোধের ৯০ বছরেরও বেশি অতিক্রান্ত হয়েছে, আর এ সময় তারা খ্রিষ্টান ও ইহুদীদের হাতে দুটি তিক্ততম স্বাদ আস্বাদন করেছে। প্রতিনিয়ত সম্মেলন, প্রদর্শনি এবং অনুষ্ঠানাদি এর মাধ্যমে করা অতীতেরে সকল প্রচেষ্টা সত্তেও অধিগ্রহন চলছে। তাই আমার উম্মাহ, আপনাদের কাছে আমি কয়েক মিনিট সময় চাইছি যাতে আপনাদের সামনে গাজার স্বাধীনতা প্রাপ্তির জন্য কিছু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ তুলে ধরতে পারি, যাতে আমার উপর ন্যস্ত কর্তব্য সমাধা করতে পারি এবং এই উম্মাহকে উৎসাহিত করতে পারি। আর সে জন্য প্রয়োজন সত্য বলার যদিও তা তিক্ত শোনায়, আর এও জরুরী যে তা যেন দূর্বল ও উচ্চ পর্যায়ের লোক — সবার জন্যই প্রযোজ্য হয়, হোক না তা শক্ত-ভারী; এর অন্যথায় তা শুধুই ধ্বংসের দিকে ধাবিত করবে, তাই সাবধান! রাসূলাল্লাহ সা: বলেছেন, “তোমাদের পূর্ববর্তীগন এই কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে যে, যখন তাদের মধ্যে সম্ভ্রান্তরা চুরি করত তখন তারা তাদের ছেড়ে দিত, কিন্তু দূর্বল কেউ চুরি করলে তার উপর হদ (শারিয়ী শাস্তি)প্রয়োগ করত।” [সম্মতিক্রমে]
আমার মুসলিম উম্মাহ: তিক্ত কিছু সত্য আপনাদের সম্মুখে স্বীকার করতেই হচ্ছে যে, গাজায় আমাদের পরিবারগুলোকে বাঁচানোর এবং তাদের উপর আরোপিত অবরোধ তুলে ফেলার জন্য আমাদের শত আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও আরও অনেকে আছেন যারা এই ব্যাপারে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের কথা, পশ্চিম তীর সহ কিন্তু তাতেও তারা তাদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের সাহায্যার্থে তেমন কিছু করতে ব্যার্থ হচ্ছে, তার একটি সুস্পষ্ট কারণ হচ্ছে: তাদের দেশগুলো পরাধীন এবং ইহুদি জায়নিষ্ট সেনাদলের সাথে আব্বাসের অধিভূক্ত সেনাবাহিনী তাদের এই কাজে বাঁধা দিচ্ছে।
একই কারণেও আমরা আমাদের পরিবারগুলোকে সাহায্য করতে পারছি না। তিক্ত সত্য এই যে, আমাদের দেশগুলো আভ্যন্তরিন শক্তি দ্বারাই পরাধীন হয়ে আছে, আরব জায়নিষ্ট এই অঞ্চলের শাসকগোষ্ঠি, যারা শত্রুদের প্রতিনিধি, আর তাদের সৈন্যবাহিনী দ্বারা মদদপুষ্ট হয়ে আমাদের এই দূর্বল এবং মজলুম ভাইদের সাহায্য করতে দিচ্ছে না।
কাজেই যতদিন পর্যন্ত আমাদের এই বোধোদয় না হচ্ছে যে, আমাদের নিজেদের দেশগুলো নিজেদের শাসকদের নিজ স্বার্থ এবং যারা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে তাদের স্বার্থের কাছে পরাধীন হয়ে আছে, এবং আমাদের শাসকেরা তাদের প্রভুদের সেনাবাহিনী এবং সাদা পোষাকে পুলিশ বাহিনী দিয়ে সহায়তা করছে, এবং আরও ভয়ঙ্কর তাদের পোষা তাগুতের গোলাম আলেম, বুদ্ধিজীবি শ্রেণী ও কিনে নেয়া মিডিয়ার সাংবাদিক যারা উম্মাহকে বিভ্রান্ত করছে, ক্ষতিগ্রস্থ করছে, প্রতি পদক্ষেপে শাসকদের গোলামীর দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, কুফ্ফারদের শক্তিশালী করছে যাতে করে তারা যেকোন সময় সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে উম্মাহকে লালসা ও ভীতি প্রদর্শন করে এমন দূর্বল করে দিতে পারে যে তারা মুক্তির জন্য কোন পদক্ষেপ না নিতে পারে …
যতদিন আমাদের এই বোধোদয় না হবে, এবং তাদের ব্যাপারে সত্যগুলো প্রকাশ করে দিতে না পারব, তাদের ব্যাপারে সতর্ক করতে না পারব, তাদের সরিয়ে দিয়ে তাদের গোলামী থেকে নিজেদের মুক্ত করতে না পারব, ততদিন আমরা ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করতে পারব না। যে ব্যাক্তির কাছে কিছুই নেই সে যেমন কিছু দান করতে পারবে না, তেমনি আমরাও সেই একই চক্রে ঘুরপাক খেতে থাকব যাতে আমরা এই পবিত্র ভূমির অধিগ্রহনের পর থেকে ঘুরপাক খাচ্ছি।
হে আমার মুসলিম উম্মাহ: যে কাছে থেকে ফিলিস্তিনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন সে জানেন, স্বাধীনতার লক্ষ্য পূরনের জন্য জিহাদের যে দাবীগুলো আছে তা অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও এখনও পূরণ হয়নি, বিগত দশকগুলোর অবস্থা তাই নির্দেশ করে, বিশেষ করে সেখানকার পরিবারগুলোর উপর যে আরোধ চাপানো হয়েছে, আর যখন তখন স্বাক্ষরিত ‘শান্তি’ চুক্তিগুলোর কথা নাই বা বললাম। এই কারণেই পর্যাপ্ত মুজাহিদীনের একটি দল গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা ফিলিস্তিনে আমাদের পরিবারগুলোর উপর থেকে অবরোধ হটাতে পারে, কারণ সমস্ত আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনের সাথে তাদের বর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে এবং সেখানে মুজাহিদীনদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দিচ্ছে; তারও বেশি, ফিলিস্তিদের উত্তর সীমান্তে লেবানন বর্ডার থেকে যেমন আশা করা হয়েছিল, হাসান নাসরাল্লাহ এবং তার দল ১৭০১ সালের অনুবন্ধে তাও বন্ধ করে দিয়েছে, যেটা কিনা হাজার হাজার ক্রুসেডারদের দ্বারা ইহুদীদের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক হবে। এভাবেই দেখা যায় হাসান বা হোসনে কারও মধ্যেই কোন তফাত নেই, যেমন নেই বাকি আরব পুতুল সরকারদের মধ্যে, যারা আমাদের পরিবারগুলোকে ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
উপরের আলোচনা অনুযায়ী, আমাদের এই আরব বেষ্টনীর মধ্যে থাকা দেশগুলোর বাইরে অন্য কোন বর্ডার খুঁজতে হবে যেখান দিয়ে মুজাহিদীনরা দলে দলে চলতে পারবে, যাতে করে আমরা পবিত্র আল-আকসায় আমাদের পরিবার গুলোর কাছে পৌঁছাতে পারি; যারা সত্যিকার অর্থে সততার সাথে আল-আকসার মুক্তি চায় তাদের জন্য অত্যন্ত দূর্লভ এবং দামী সুযোগ হচ্ছে ইরাকের মুজাহিদীনদের সর্বস্ব দিয়ে সহায়তা করা যেন মেসোপটেমিয়া অবমুক্ত করা যায়। আর এর মাধ্যমে তারা দুটি দায়িত্ব সম্পাদন করতে পারবে: জর্ডানে প্রবেশেরে পূর্বেই জায়নিষ্টদের সবচেয়ে বড় সহযোগীকে পরাজিত করা, যেহেতু এইটাই সবচেয়ে চৌকস এবং বড় সেনাবহর, যার অর্ধেক হচ্ছে ফিলিস্তিনের বাসিন্দা যাদের পূর্বে এখান থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল; আর জর্ডান থেকে, দ্বিতীয় পদক্ষেপ হবে পশ্চিম তীরে আর তার আশেপাশের অঞ্চলে, আর বর্ডার গুলো সেনাদের জন্য খুলে দেয়া হবে যাতে প্রয়োজনীয় রসদের অভাব পূরণ করা যায়, যাতে আল্লাহর ইচ্ছায় নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত পুরো ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা যায়। তাহলে এটাই শরিয়া সম্মত এবং একই সাথে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ, বেশিরভাগ বলছে যে সংলাপ আক্রমনের চেয়ে অনেক গুন ভাল যা কিনা শত্রু সেনাদের অস্ত্রের মোকাবেলায় দূর্বল এবং তাদের সেনাবাহিনীর ক্ষতি করতেও সক্ষম নয়।
অনেক হয়েছে আলোচনা আর সময় নষ্ট করা আর দায়িত্ব এড়িয়ে চলা: এই দীর্ঘ অবরোধে গাজায় চলমান গণহত্যা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এবং ঐতিহাসিক ও স্পষ্ট দু:খজনক ঘটনা যা কিনা মুনাফিকদের থেকে মুসলিমদের পৃথক হয়ে যাওযার প্রয়োজনীয়তাকেই যর্থার্থ ভাবে প্রমান করেছে। গাজার পরে আমাদের অবস্থান আর কোন ভাবেই গাজা পূর্ব অবস্থানের ন্যায় হতে পারে না; বরঞ্চ তা দাবী করে সত্যিকারের আক্রমণ আর জিহাদের, সত্যকে প্রতিষ্ঠিত ও মিথ্যাকে অপসারিত করবার জন্য। আর সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর নিকট আমাদের নিরাপধ সত্তাকে প্রমান করার জন্য তাদের থেকে পৃথক হবার মাধ্যমে যারা আল্লাহ শত্রুদের সাথে গাজায় একাত্ম হয়েছে। শত্রুদের এই সহযোগীদের থেকে পৃথক হওয়া এখন আর কোন ঐচ্ছিক বিষয় নয, বরং তা তাওহীদের দুই ভিত্তির একটি।
মুসলিমদের বিরুদ্ধে কুফ্ফারদের সাহায্য করা একটি বড় ধরনের কুফর যা একজনকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। মহান আল্লাহ তাআ’লার এই আয়াত পড়ে দেখুন:
“হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।” [৫:৫১]
“দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নি:সন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। সুতারাং যে ব্যক্তি তাগুতকে অমান্য করে এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।” [২:২৫৬]
কাজেই এই চলমান ঘটনা আমাদের সকলের জন্যই পরীক্ষা: যে আল্লাহর হুকুম মেনে চলবে সে এতে সফলকাম হবে, আর যে তার ব্যাতিক্রম করবে সে অকৃতকার্য হবে। আমাদের এখন এমন একটি সৎ নেতৃত্ব দরকার যিনি জিহাদের ময়দানে যথেষ্ট পরিমান মুসলিমদের একত্রিত করতে পারবে। এই উম্মাহ এখন নেতৃত্বের অভাবে কাতর। যদিও উম্মাহর অনেক সন্তান এই বিশ্বাসে আছেন যে তারা এমন নেতৃত্বের অধীনে আছেন যারা তাদের নিরাপদ ভবিষ্যত উপহার দিবেন যদি তা রাজা বা প্রেসিডেন্টের মত প্রথম সারির না হলেও অন্তত দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির নেতৃত্ব কিন্তু সত্য তো এই যে, এটি একটি বড় ধরনের বিভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই নয় এবং সত্য গোপনের একটি অবলম্বন মাত্র, এবং ফিলিস্তিন নয় দশকেরও বেশি সময় ধরে এখনও অবরুদ্ধ, বরং তা ফিলিস্তিনের সীমানা পেরিয়ে এখন আরও বিস্তৃত, আর তার সাথে পর্যাপ্ত সংস্থাপন থাকা সত্ত্বেও দারিদ্র, অজ্ঞতা আর রোগ বালাই এর সম্প্রসারণের কথা নাই বা উল্ল্যেখ করলাম যা সেই বিভ্রান্তিকেই প্রমাণ করে। একটি জাহাজ যত বড় আর সুন্দরই হোক না কেন, একজন বিশ্বস্ত নাবিকের নেতৃত্ব ছাড়া তা কিছুতেই তীরে পৌঁছাতে পারে না।
আমরা আমাদের প্রথম সারির নেতৃত্বের আসল রুপ চিনি আর কুফ্ফারদের প্রতি তাদের নত:শীর মনোভাবের সাথেও ভালোমতই পরিচিত, কিন্তু সবচেয়ে খারাপ এবং তিক্ততর ঘটনা হচ্ছে তারা তাদের পরে হাল ধরার জন্য আরও কিছু নেতা তৈরী করে ফেলেছে। যতদিন পর্যন্ত দ্বিতীয় সারির নেতাগন এবং তাদের কাছের লোকেরা এই সব নেতৃবর্গের মননকে এবং মিষ্ট কথাকে এই মিথ্যার বিরুদ্ধে পুত:পবিত্র না করবে বা তাদেরকে পরিবর্তন করে নতুন নেতৃত্ব না আনবে, এই উম্মাহ ততদিন পর্যন্ত আল-আকসা কে মুক্ত করার জন্য কিছুই করতে পারবে না, কারণ তারা উম্মাহর এই অদ্ভুত অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা একটি রেল লাইনের মত যাতে বছরের পর বছর একটি ট্রেন স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যার মাথায় রয়েছে প্রথম সারির নেতৃবর্গ, আর তার পরে দ্বিতীয় সারির এবং কাছের লোকেরা, আর তারা যুগ যুগ ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কাজেই আল-আকসাকে মুক্ত করতে হলে একটাই পথ খোলা আছে, আর তা হল আমাদের পথ থেকে এই ট্রেন গুলোকে সরিয়ে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে
যেতে হবে; কিন্তু তা খুবই কঠিন পথ যদি না মুসলিমদের
অধিকাংশ তাদের ঘুম থেকে জেগে না উঠে এবং নিন্দনীয় জাতীয়তা ও ব্যক্তি কেন্দ্রিকতার মায়াজাল
থেকে বের না হয়ে আসতে পারে। তারা যাই হোক না কেন, শাসক,
আলেম, ইসলামিক নামধারী দলের প্রধান এদের
সবাইকেই ত্যাগ করে তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও তাদের উপদেশ দিতে হবে এবং সত্যকে
তাদের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যদি মুসলিমরা তা না করে, তবে
তাদের এই কাজ তাদেরকে পূর্ববর্তীদের মতই ধ্বংস করে দিবে, আর
এই কারণেই উম্মাহর অন্ধকারাচ্ছন্ন ভুল ভাঙ্গতে যুগ যুগ ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে, আর মনে হচ্ছে তারা আল্লাহর রাসূলের সা: সেই বাণীর অর্থ অনুধাবন করতে
পারেনি, “আল্লাহর কসম, যদি
মুহাম্মদের মেয়ে ফাতিমাও চুরি করত, তবে আমি তার হাত কেটে
দিতাম।” [সম্মতিক্রমে]
প্রজন্মের আত্মশুদ্ধির জন্য কুরআন হাদিসের পরামর্শগুলো আমাদের মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে, আর আমাদের বুঝতে হবে যে সত্যই সব কিছুর উপরে, আর মাতৃভুমি, ব্যক্তি এবং দলের সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার চেয়ে সত্যের সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা অধিক জরুরী। পৃথিবীর আর সকল মানুষের কথা গ্রহনযোগ্যও হতে পারে, বা অগ্রহনযোগ্যও হতে পারে রাসুলাল্লাহ সা: ব্যতীত, যিনি বলেছেন, “নসিহত করাই আমাদের দ্বীন” [তিরমিযি, নাসা’ঈ, আহমাদ]। কাজেই আমরা যদি তাতে অবহেলা করি, তবে আমরা আমাদের দ্বীন থেকে বিচ্যুত হয়ে যাব। এটাই আমাদের বাস্তবতা, আর উমার রা: বলেছেন, “আমরা হচ্ছি সেই জাতি যাকে আল্লাহ ইসলামের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন, কাজেই আমরা যখনই অন্য কোন কিছুতে সম্মান খুঁজব, আল্লাহ আমাদের অপমানিত করবেন।” সুতরাং যারা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, তারা উপদেশ গ্রহন কর।
আর নেতৃত্বের প্রশ্নে যদি ফেরত আসি, আল-আকসাকে স্বাধীন করার জন্য দরকার একটি সত্যিকার, ন্যয়পরায়ন, স্বাধীন, শক্তিশালী, বিশ্বাসী নেতৃত্বের যা এই বিশাল বিস্তৃত ঘটনাগুলো সামাল দিতে সক্ষম, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো সম্বন্ধে যারা ফিকহি জ্ঞানে জ্ঞানী, শারিয়াহর ফিকহ সম্বন্ধে যারা জ্ঞাত, যিনি বিশ্বের সকল ইসলামিক দেশগুলোতে শাখা সহ শুরা গঠন করবে যা সব জায়গায় সময়মত তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করবে, উম্মাহর মধ্যে আইনগত ও রাজনৈতিক সচেতনতা গড়ে তুলবে, তখনই উম্মাহ মনন অজ্ঞতা ও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাবে, আর উম্মাহর আত্মা সেইসব শাসকদের দাসত্ব এবং নতী স্বীকার করা থেকে মুক্তি পাবে যারা নিজেরাই উম্মাহর শত্রুদের নিকট মাথা নত করে দাসত্ব স্বীকার করে নিয়েছে।
আমরা বর্তমান যে অবস্থায় বেঁচে আছি তার ভয়াবহতা অনুধাবন করা এবং এই পরিস্থিতির পিছনে আমাদের শাসকদের ও তাদের সহযোগীদের ভুমিকা বুঝতে পারাই এই অন্ধকার অধ্যায় থেকে বের হবার জন্য উম্মাহর প্রেরণার প্রাথমিক উৎস। এই বাস্তবতার সাথে এখানে অবশ্যই শারিয়ার ফিকহি সিদ্ধান্তগুলো প্রয়োগ করতে হবে, আর তাহলেই আমাদের এই আন্দোলন সরল পথে পরিচালিত হবে, অপমানজনক অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে এবং আমাদের শত্রুদের কাছে নতশীল শাসকগোষ্ঠীর শোষণ থেকে মুক্তি মিলবে।
এই শুরা কমিটিকে অবশ্যই শাসকদের কাউন্সিলের যে কোন ধরনের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে হবে, তাদেরকে অবশ্যই বর্জন করতে হবে এবং তাদের এই শুরাতে তাগুতী দুষ্টু আলেমদের মাধ্যমে গোপনে প্রবেশ করার ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকতে হবে, যেমনটি আমাদের বেশ কিছু দেশের শুরা কমিটিতে আমরা লক্ষ্য করেছি। আমাদের আর একটি কর্তব্য হচ্ছে এই বিষয়ক যত শারিয়ী হুকুম আছে তার দালীল সবার মধ্যে প্রচার করা, যেমন: যথেষ্ট পরিমান সামর্থ্য না হওয়া পর্যন্ত জিহাদ করা সবার জন্য ফরয হয়ে যায়, গাজার চলমান ঘটনাগুলো নিয়ে বিভিন্ন আলেমের প্রকাশিত ফাতওয়াগুলোর প্রচার করা যাতে বলা হয়েছে যে, কেউ যদি ইসলামের শত্রুদের মুসলিমদের বিরুদ্ধে সাহায্য সহযোহিতা করে তবে সে ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে যায়, আর এই ফাতওয়া থেকে অন্যান্য হুকুমের যে শাখা প্রশাখা গুলো বের হয়েছে।
আমি আলেম এবং দায়ী’দের সামনেও কিছু প্রস্তাব রাখতে চাই, তাদের অনুরোধ করতে চাই তারা যেন এগুলোকে পরিপূর্ন এবং যথার্থ করার জন্য সম্ভব সকল প্রচেষ্টাকে চালু রাখে। এই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে:
প্রথমত, উম্মাহকে পরামর্শ দেবার মত সৎ আলেম, দায়ী’, চিন্তাবিদ এবং লেখকদের একটি লিস্ট তৈরী করা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ন ও পরিচিত লেখাগুলোরও লিস্ট তৈরী করে তা উম্মাহর জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া। আর তাদের কাজের বা লেখার কিছু অনৈচ্ছিক ভুল থাকতে পারে যেগুলো কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়ানো উচিত নয়: বরঞ্চ এই ভুলগুলো নোট কর তার ব্যাপারে পরামর্শ করা যেতে পারে; তা না হলে আমাদের মধ্যে আর কোন আলেমকেই অবশিষ্ট পাবো না, তাদের কথা নাই বা বললাম যারা পুরোপুরি আলেম হিসেবে স্বীকৃত নন। আর ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক যারা নেতৃত্ব দিতে চায় তাদের অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে।
উম্মাহর জীবনে এবং চিন্তা চেতনায় আইনী বিষয় নিয়ে ধ্যান ধারনার পরিবর্তন ঘটাতে হবে, এই সম্বন্ধে বেশ কিছু উপকারী বই পাওয়া যায় যার মধ্যে:
· শায়েখ আব্দ আল-রহমান বিন হাসান আল শাঈখ এর “Achievement of the Glorious”, যাতে তাওহীদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ন আলোচনা করা হয়েছে এবং শিরক সম্বন্ধে সতর্ক করা হয়েছে, আরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কবরের শিরক এবং রাজপ্রাসাদের শিরক।
· শায়েখ মুহাম্মাদ কুতুব এর দুটি বই, “Concepts which must be corrected”, “Are we Mulsims”
· মুজাহিদ শায়েখ নাসির বিন হামদ আল ফাহাদ (আল্লাহ তাকে রিয়াদের কারাগার থেকে মুক্ত করুন) এর “The Clarification of the Unbelief of He Who Aids the Americans”।
পঞ্চম আর একটি বই আছে যা সমগ্র মুসলিম বিশ্বের সকল রাজতন্ত্রের বিশ্লেষন করেছে, যদিও এর শিরোনাম হচ্ছে “The Saudi Regime on the Scales of Islam”। এছাড়াও আরও অনেক সুন্দর এবং উপকারী বই এখন ইন্টারনেটেই পড়ার সুযোগ আছে, যেমন al-Tawheed wal-Jihad ওয়েবসাইটটি।
তৃতীয়ত, উম্মাহকে এই সত্য ভালোমতো জানিয়ে এবং বুঝিয়ে দেয়া যে তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে -যাতে উম্মাহ সতর্ক হতে পারে এবং সেই সকল বৈধ করে ফেলা পরিভাষাগুলোর মৃত্যু হয়ে যায় যার পিছনে আড়াল নিয়ে আল্লাহর নিষধ করা কাজ গুলে করা হচ্ছে। এই বৈধ করে ফেলা নামগুলোকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং তা ছড়িয়ে দিতে হবে। এখানে কিছু উদাহরণ দেয়া হল:
· হারাম সুদকে নতুন নাম দিয়ে হালাল করার চেষ্টা, সুদকে বলা হচ্ছে ‘মুনাফা’ বা ‘ইন্টারেষ্ট’, আর সুদি ব্যাংক গুলোকে বলা হচ্ছে ‘ব্যবসায়ী ব্যাংক’।
· তারা হারাম মদকে ‘স্পিরিট’ বা অন্যান্য নাম দিয়ে হালাল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
· যখনই তারা আল্লাহর রাস্তায় কাউকে জিহাদরত দেখছে তখনই তারা ইসলামের এই চূড়ার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে আর জিহাদকে বলছে ‘হিংস্রতা’ বা ‘সন্ত্রাসবাদ’।
· যখন তারা আল্লাহর দুশমনদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করে ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে যায়, তখন যারা তাদের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদেরকে তারা ‘তাকফিরি’ বলে ধর্ম ত্যাগীর শাস্তি প্রদান করে।
আর তারা এখন বিভিন্ন আইনি ভাষার ব্যবহার করছে শুধু এই জন্য যে তারা কুফ্ফার, ধর্মত্যাগী, জিন্দিক এবং মুনাফিকদের অন্য নামে ডাকবে। যেমন তারা এখন ছলচতুরির আশ্রয় নিয়ে এমন সব শব্দমালা ব্যবহার করছে যেমন, ‘আন্ত:ধর্মীয় আলোচনা’, ‘মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা’, ‘কথার স্বাধীনতা’, ‘শান্তিপূর্ন সহাবস্থান’, ‘বন্ধু রাষ্ট্র’। একই সাথে তারা ক্রুসেডারদের যুদ্ধকে সহযোগীতা করার চুক্তিপত্র সাক্ষর করছে যখন ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা আমাদের ভাইদের নির্বিচারে হত্যা করছে ফিলিস্তিনে, ইরাকে, আফগানিস্তানে, ওয়াজিরিস্তানে, সোমালিয়ায়, কাশ্মিরে, ফিলিপিনে এবং চেচনিয়ায়। কাজেই যারা এই বিশাল কর্মকান্ডকে সহনীয় করার জন্য বিভিন্ন ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন নামে এগুলোকে প্রচার করছে, তাদের উপর নজরদারী রাখতে হবে, তাদের সত্যগুলোকে সবার সামনে খুলে দিতে হবে এবং তার প্রচার করতে হবে।
চতুর্থত, মুনাফিক এবং মিডিয়ার শত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে, বিশেষত তথ্য প্রবাহের সাথে যুক্ত খবরের কাগজ, বই, ম্যাগাজিন, রেডিও স্টেশন এবং স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো, যাদের মধ্যে শেষোক্ত দুইটিই সবচেয়ে ভয়াবহ, যেমন বিবিসি আর তার সহযোগীরা, আল-হুররাহ, আল-আরাবিয়্যাহ। তাদের তালিকাও প্রস্তুত করতে হবে যারা আমাদের না বুঝেই শত্রুদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে, যেমন গুজব ছড়ানো যা মুসলিমদের মানসিক মনোবল ভেঙ্গে দিচ্ছে এবং পলায়নপর করছে। আমাদের আইনের আওতায় থেকে এবং উম্মাহর মধ্যে এদের তালিকা প্রকাশ করে দিয়ে তাদের সতর্ক করে দিতে হবে, আর এই তালিকার সাথে প্রমান স্বরুপ সকল তথ্য উপাত্ত, তাদের ভাষন, উক্তি ইত্যাদি জুড়ে দিতে হবে এবং সাথে সাথে এগুলোর বিরুদ্ধে শরিয়া ভিত্তিক দালিলের ভিত্তিতে এগুলোকে খন্ডন করতে হবে। এখানে আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর বানী মনে করিয়ে দিব: “হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। সুবিচার কর এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত।” [৫.৮]
মুনাফিকদের আসল পরিচয় প্রকাশ করে দেয়া একটি কুরআনের ত্বরিকা, আর আলেমরাও বিদাআ’তি ও মুনাফিকদের পরিচয় প্রকাশ করারকে অবশ্য কর্তব্য বলে রায় দিয়েছেন। ইমাম আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, “আপনি কাকে বেশি পছন্দ করবেন, সেই ব্যক্তিকে যে সিয়াম রাখে, সালাত পড়ে ও ইতিকাফ করে নাকি সেই ব্যক্তিকে যে বিদাআ’তির সম্পর্কে কথা বলে?” তিনি উত্তর করলেন, “সে যদি সালাত পড়ে ও ইতিকাফ করে তবে তা শুধুই তার জন্য, কিন্তু যদি সে বিদাআ’তির সম্পর্কে কথা বলে তবে তা মুসলিমদের জন্য, সুতরাই এটাই উত্তম।”
সকল ক্ষেত্রে মুনাফিকদের পরিচয় জানাটা এখন উম্মাহর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বিশেষত গাজার পর। তাদের থেকে সতর্ক থাকা, তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা, যেমন পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন: “আপনি যখন তাদেরকে দেখেন, তখন তাদের দেহাবয়ব আপনার কাছে প্রীতিকর মনে হয়। আর যদি তারা কথা বলে, তবে আপনি তাদের কথা শুনেন। তারা প্রাচীরে ঠেকানো কাঠসদৃশ্য। প্রত্যেক শোরগোলকে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হোন। ধ্বংস করুন আল্লাহ তাদেরকে। তারা কোথায় বিভ্রান্ত হচেছ ?” [৬৩.৪] এবং “হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।” [৯.৭৩]
সার কথা হচ্ছে, আমাদের জন্য এখন অবশ্য জরুরী হচ্ছে সত ও সত্যবাদী নেতৃত্ব, আইনী এবং রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা, মুনাফিকদের মুখোশ খুলে দেয়া ও তাদের থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া ও নিজেদের আলাদা করে নেয়া, মনে রাখা যে শাসকদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই পৃথকিকরণ করা হয়ে গেছে। শাসকগোষ্ঠি তাদের নিজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ লালন পালন করছে যাদের কর্মী সংখ্যা হাজারে হাজারে, যারা উম্মাহর পরামর্শদাতাদের উপর তাদের নজরদারী রাখছে, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করছে যেন তাদের বিরুদ্ধে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে:
তারা লোভ দেখিয়ে, মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে, চাকুরিচ্যুত করে, জেল জরিমানা করে, ভ্রমনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাড়া করে, মর্যাদাহানী করার মাধ্যমে, এমনকি খুন করে শুধুমাত্র উম্মাহকে সেই হেদায়েতের রাস্তা থেকে দূরে রাখার জন্য যার মাধ্যমে উম্মাহকে পরামর্শ দেয়া হয়, ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সাবধান করা হয়; আর এর মধ্যে তারা তাদের পোষ্য উলামা এবং মিডিয়ার মাধ্যমে সর্বত্র খোলাখুলিভাবে তাদের প্রতারণাকে ছড়িয়ে দিতে থাকে এবং উম্মাহকে বিভ্রান্ত করতে থাকে।
সময় সল্পতার জন্য শত্রুদের তালিকার মধ্যে আমি কেবলমাত্র আমাদের দেশগুলোর প্রবীন নেতৃবৃন্দের কথা উল্লেখ করব। এই সব ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু মানুষকে আলাদা করে চিহ্নিত করা গেছে, বিশেষ করে উচ্চ বংশীয়, গোত্র নেতা, কিছু শাসক এবং উলেমা; আর এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, আরব কিছু শাসকেরা ক্রুসেডার/জায়নিষ্টদের সাথে আমাদের ভাই বোনেদের বিরুদ্ধে গিয়ে মৈত্রীত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে: তারা হচ্ছে সেই শাসকেরা যাদের আমেরিকা নাম দিয়েছে ‘উদারপন্থী দেশের শাসক’। সত্যি কথা বলতে কি, ইন্দোনেশিয়া থেকে মৌরিতানিয়া পর্যন্ত সবগুলো দেশই কোন ব্যতিক্রম ছাড়াই এই দুইটি ধরনের যে কোন একটিতে পড়ে: দূর্নীতিপরায়ন দেশ, অথবা আরও বেশি দূর্নীতিপরায়ন দেশ; ইসলাম এদের শাসকদের অপকর্ম থেকে পৃথক ও পবিত্র।
ইসলামের শুরুতে যে বিষয়গুলো শাসন ব্যবস্থাকে দৃঢ় ও মজবুত করেছিল যাতে তা নতুন সাম্রাজ্যের ভার বহন করতে পারে তা কোন গোপন বিষয় নয়, তাদের মধ্যে জনগনের ঈমান ও সাধারণ জীবনের পর সবচেয়ে জরুরী বিষয়গুলো হলো — মু’মিন এবং মুনাফিকদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য। সেই অত্যন্ত কঠিন ঘটনাগুলো এবং হৃদয়বিদারক দু:খ কষ্টগুলো ভালোকে মন্দ থেকে এবং সৎ লোককে মুনাফিক থেকে তীব্রতার সাথে আলাদা করে ফেলেছিল, যেমন আল্লাহ সুবহানাহুয়াতাআ’লা বলেন: “আর যেদিন দু’দল সৈন্যের মোকাবিলা হয়েছে; সেদিন তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তা আল্লাহর হুকুমেই হয়েছে এবং তা এজন্য যে, তাতে ঈমানদারদিগকে জানা যায়। এবং তাদেরকে যাতে সনাক্ত করা যায় যারা মুনাফিক ছিল। আর তাদেরকে বলা হল এসো, আল্লাহর রাহে লড়াই কর কিংবা শত্রুদিগকে প্রতিহত কর। তারা বলেছিল, আমরা যদি জানতাম যে, লড়াই হবে, তাহলে অবশ্যই তোমাদের সাথে থাকতাম। সে দিন তারা ঈমানের তুলনায় কুফরীর কাছাকাছি ছিল। যা তাদের অন্তত্মরে নেই তারা নিজের মুখে সে কথাই বলে বস’তঃ আল্লাহ ভালভাবে জানেন তারা যা কিছু গোপন করে থাকে।” [৩:১৬৬-১৬৭]
উহুদের যুদ্ধের দিনে মুসলিমদের উপর যে ভয়াবহ বিপদ আপতিত হয়েছিল তার মধ্যে একটি হল, মুসলিম বাহিনীর এক তৃতীয়াংশ মুনাফিকদের সর্দার আব্দুল্লাহ বিন উবাই বিন সালুল এর কাছে আত্মসমর্পন করল, সে তাদের সাথে প্রতারণা করল এবং বলল যে শত্রুদের সাথে যুদ্ধ না করতে। আজকের দিনে সব মুসলিম দেশের সেনাবাহিনীই মুনাফিক শাসকদের অধীনস্ত, অপরপক্ষে বেসামরিক সেনাবহিনীর সিংহভাগই ইসলামিক দলগুলোর নেতাদের অধীনে আছে, যাদের অনেকেই মনে করেন যে আমাদের প্রচলিত সরকারই শারিয়াভিত্তিক সরকার এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা যাবে না; তাই যদি হয় তবে আমাদের উপর এভাবে একের পর এক দু:খ দুর্দশা কেন আপতিত হচ্ছে?! গাজা আর এর অধিকাসীদের পরিত্যাগ করার মধ্য দিয়েই এইসব দলগুলোর অবস্থান পরিষ্কার হয়ে গেছে, তারা মুনাফিকদের কাছ থেকে জিহাদের হুকুমের অপেক্ষারত ছিল; যুবকদের উত্তম ব্যবহারের এটি কেমন নমুনা তারা পেশ করল?!
আমাদের দায়িত্ব হল নেতৃত্ব এবং হেদায়েতের জন্য মুনাফিক এবং পরিত্যাগকারীদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখা, যেমন উহুদের সফরের পর সাহাবীরা করেছিলেন; যখন ইবন সালুল বরাবরের মত মুসলিমদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে উঠে দাঁড়াল (সে একজন গোত্র নেতা ছিল এবং মুসলিমদের প্রথম দলটিকে নির্দেশনা দিয়ে সে তার সেই প্রাধান্য বজায় রাখতে চেয়েছিল), সাহাবারা তখন চারিদিকে থেকে তার কাপড় মুঠি করে আঁকড়ে ধরল এবং বলল, ‘বসে পড় আল্লাহর দুশমন: তুমি যা করেছ তার পরে এই কাজ তোমাকে আর শোভা দেয় না।’
আমাদের চারপাশে এখন অসংখ্য এমন আলেম আছে যারা হেদায়েতের ধারক হিসেবে নানাভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং উম্মাহকে মুনাফিক শাসকদের অধীনস্থ করবার জন্য বিভ্রান্ত করার সমস্ত আয়োজন করছে, ফিলিস্তিনকে অবমুক্ত করার জন্য জিহাদ থেকে বিরত রাখছে। কাজেই তাদের প্রত্যেকের সাথে মুখোমুখি বা ফোনে কথা বলা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় যেমন বলা হয়েছিল তাদের প্রথম এবং প্রধান ইবন সালুলকে, ‘‘বসে পড় আল্লাহর দুশমন: তুমি যা করেছ তার পরে এই কাজ তোমাকে আর শোভা দেয় না’। সাহাবারা রা: যা করেছিলেন ইবনে সালুলের মুখোশ খুলে দেবার জন্য এবং তাকে মুসলিমদের ধর্মীয় নেতাদের কাতার থেকে সরিয়ে দিতে, যাতে সে অন্য কোন জিহাদের সফরে একই ভাবে আবার এক তৃতীয়াংশ সেনা নিয়ে সরে যেতে না পারে আর মুসলিমরা আবার একই বিপদের সম্মুখিন হয়; আর আমাদেরও তাই করা উচিত, কারণ মুনাফিকরা এবং পরিত্যাগকারীরা দশকের পর দশক আমাদের মধ্য থেকে দলত্যাগী তৈরী করছে। এই হচ্ছে আমার কিছু পরামর্শ যা আমি মনে করি উম্মাহকে স্বাধীন করার জন্য কাজে দিবে এবং তাদের গলা থেকে পরাধীনতার যাবতীয় শিকলকে ভেঙ্গে ফেলবে, যাতে তারা মুক্ত হয়ে তাদের মধ্য থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্যের একটি দল তৈরী করতে পারে যারা আল্লাহর রাস্তায় তাদের ঈমানী ফরযকে আদায় করবে: সেই শত্রুদলকে হটিয়ে দিবে যারা দ্বীন এবং দুনিয়া উভয়ই ধ্বংস করছে। আমাদের গন্ডদেশ থেকে পরাধীনতার শিকলের একটি ভেঙ্গে ফেললেই তা বাকি সবগুলোকে ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করবে ইনশা-আল্লাহ।
আজ বেশকিছু জিহাদের উন্মুক্ত ময়দানের সুযোগ আমাদের সামনে আছে যেখানে আমরা এই ফরয কাজকে আনজাম দিতে পারি, বিশেষত ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সোমালিয়া এবং পশ্চিমা ইসলামিক মাগরেবে। তাই আমি আল্লাহর হেদায়েতের প্রার্থনা করি যেন তিনি আমাদের দ্বীন পালন করার এবং তাঁর রাস্তায় জিহাদ করার তৌফিক দান করেন, যাতে আমরা আমাদের মুসলিম দেশগুলোকে মুক্ত করতে পারি, বিশেষ করে ইরাক এবং ফিলিস্তিন থেকে যেন তাদের বিতাড়িত করতে পারি।
শেষে আমি উম্মাহকে মুত্তাকি ও ঈমানী জোড় ওয়ালাদের সাথে তাদের হৃদয়কে কাছাকাছি রাখার গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আর লোভ ও মুনাফিকির জায়গা থেকে নিজেদের হেফাজত করতে বলতে চাই, আর আামাদের জিহ্বাকে আল্লাহ আযওয়াযালের স্মরণে সর্বদা সিক্ত রাখার মাধ্যমেই একাজকে সহজ করে নিতে পারি, আর প্রতিদিন কুরআনের তিরিশ পাড়ার মানে বুঝে তাতে মনোনিবেশ করে তিলাওয়াত করি, যা হৃদয়কে সজীব করে, মনকে প্রান্জল করে, আমাদের শত্রুদের, মুশরিকদের আর মুনাফিকদের স্বভাব চরিত্র বুঝতে সাহায্য করে। আল্লাহর আয়াত পড়ুন: “হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।” [১০.৫৭]
আমি আরও বলব, যে বই গুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা পড়তে এবং গুরুত্ব অনুধাবন করতে, তালিকার পুস্তিকাগুলো শেষ করতে, তা পালন করতে এবং সেগুলো প্রচার করতে, কারণ এগুলো হলো ঘরের এবং বাইরের শত্রুদের আক্রমণের আঁধারের মধ্যে আলোর রশ্মি।
পরিশেষে আমি আমার নিজেকে এবং ভাইদের এই স্তবক দিয়ে অনুপ্রাণিত করতে চাই:
আর আমার প্রত্যয় আমাকে জিজ্ঞাসা করে
কেন এই কাপুরুষতা আর দূর্বল হয়ে থাকা
যখন আমাদের পৃথিবী পূর্ণ হয়েছে
সেই তাগুতদের দ্বারা যাদের ছবিগুলো ঝুলছে
আমাদের ঈমানকে দূর্বলতর করার জন্য
আর যাদের মধ্যেই আমাদের ক্ষতিগুলো বাসা বেঁধেছে
আমার ভাই, হে পরাক্রমশালী
আমাদের লক্ষ্য তো আল্লাহর পথে
তুমি কি মৃত্যুকে ভয় পাও
যখন মৃত্যুই তোমার জান্নাত?
দ্বীনের ভিত্তি তো বুলন্দ হবে না
ভোট দিয়ে বা পরিত্যাগ করে
তলোয়ারের মত আর কিছুই উপকারে আসবে না
বিশ্বাস করো, ও জামানার যুবকেরা
ও আল্লাহ
আামাদের সত্যকে সত্য হিসেবে চেনার এবং তা অনুসরন করার তৌফিক দিন, আর আমাদের মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে চিনার
ও তাকে বর্জন করার তৌফিক দিন। ও আল্লাহ এই উম্মাহকে একজন ন্যায়নিষ্ঠ শাসক দিন যাকে
মান্য করলে আপনি সম্মানিত হন এবং যার অবাধ্য হলে আপনার অমর্যাদা হয়, এবং যার অধীনে ভালো কাজের আদেশ এবং খারাপ কাজের নিষেধ করা হবে। ও
আল্লাহ, আমাদের রব, আামাদের এই
দুনিয়ায় এবং আখিরাতে কল্যাণ দান করুন, আমাদের জাহান্নামের
আগুন হতে রক্ষা করুন। ও আল্লাহ সর্বত্র মুজাহিদীনদের জয় দান করুন, তাদের শাহাদাত কে কবুল করুন, তাদের আঘাত প্রাপ্তদের
শেফাদিন এবং বন্দীদের মুক্ত করুন। আপনি তো সর্ব বিষয়ে সর্ব ক্ষমতার অধিকারী। ও
আল্লাহ ক্রুসেডার/জায়োনিষ্টদের মিত্র বাহিনীকে ধ্বংস করুন, তাদের সহযোগীদেরও। ও আল্লাহ আমাদের আপনি ছাড়া আর কোন শক্তি বা ক্ষমতা
নেই, কাজেই আপনি আামদের সাহায্য প্রেরণ করুন এবং আমাদের
কুফ্ফারদের উপর জয়ী করুন। ও আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ, তার
পরিবার ও সাহাবীদের উপর সালাত ও কল্যাণ পেশ করুন; আর
আমাদের শেষ দুআ হল, সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি জগতসমুহের
অধিপতি।
লেখক- শাইখ আবু হামজা উসামা রাহিমাহুল্লাহ।
রবি উল আউয়াল ১৪৩০
মার্চ, ২০০৯
উৎস: আস-সাহাব মিডিয়া
পরিবেশনায়
আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া
0 Comments