Ad Code

Responsive Advertisement

নাইন ইলেভেন ইফেক্ট




সোভিয়েতের পতনের পর এই Uni polar পৃথিবীতে অ্যামেরিকা সাথে এর নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোট নিজেকে এই পৃথিবীর সর্বেসর্বা না ভাবাটাই অস্বাভাবিক। নিজেকে সব শক্তির উপরে ভেবেও নিজেকে খুব বেশি ইনসিকিউর রাখে নি এই Capitalist শক্তি। তাই নিজেকে পম্পেওর[১] মতো খুব শক্তিশালী ভাবার নিশ্চয় কারণ আছে। কিন্তু স্বয়ং অ্যামেরিকার জনগণও স্বীকার করে তাদের এই সোনালি সেই দিনের কথা যে অতীত হয়ে যাচ্ছে তার জন্য দায়ী নাইন ইলেভেনের সেই ঐতিহাসিক ঘটনা[২]।

 

এই হামলা কে করেছে তা আসলে আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। উসামা বিন লাদেন বলেন, 

 

“I am responsible for assigning the 19 brothers on these raids. I didn’t assign brother Zacarias on this mission. His confession that he was a part of this attack is incorrect and made under duress.”[৩]


 Al Qaeda in Indian Subcontinent (AQIS) এর প্রধান মাওলানা আসিম উমার বলেন,

কিছু আল্লাহর বান্দা এই ভবন ধ্বংস করে যাকে পুরো বিশ্ব রিজিকদাতা হিসেবে পূজা করে। এটি কোনোভাবেই ইয়াহুদীদের কাজ নয়। বেশিরভাগ মুসলিম মনে করে এই কাজ ইয়াহুদিদের কারণ তারা বিশ্বাস করে না মুসলিমরাও এতো শক্তিশালি হামলা করতে পারে। তার যথার্থ প্রমাণ আছে আমাদের কাছে।[৪] 

তালিবানের নেতা মোল্লাহ দাদুল্লাহ বলেন, 

এই হামলার পরিকল্পনা করে শাইখ উসামা। ...... এই হামলায় Inner bombing এর জন্য  কোনোভাবেই উসামাকে ইয়াহুদীদের এজেন্ট বলা যায় না। কারণ উসামা অনেকদিন ধরেই ......”।[৫]


 এছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক বুদ্ধিজীবিরা একে আল কায়েদারই কাজ বলে আসছেন।[৬]


তারা নিজেরাই এটা স্বীকার করা সত্ত্বেও বিপরীত মতও আছে। ডা. জাকির নায়িক নাইন ইলেভেন হামলার উপর একটা লেকচারে একে সরাসরি ইয়াহুদীদের কাজ বলেছেন।[৭] এছাড়াও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নোয়াম চমস্কি এই হামলাকে অ্যামেরিকার নাটক বলে আখ্যায়িত করেন।[৮] এছাড়াও সেদিন পেন্টাগনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।[৯] ফিলিপ মার্শাল[১০], বব উডওয়ার্ডরা[১১] একে আবার সৌদি আরবের রাজতন্ত্রের কাজ বলেও মনে করে। ট্রেইনাররা নাকি ফ্লোরিডা, লাস ভেগাসে ঐ হাইজ্যাকারদেরকে ট্রেনিং দিয়েছে। আল্লাহু আলাম।

জর্জ বার্নার্ড শ বলেন,

পশ্চিমারা যখন কোথাও আগ্রাসন চালাতে চায় তখন তারা সেখানে একজন পাদ্রী পাঠায়। স্থানীয় জনগণকে দিয়ে পরে তাকে হত্যা করায়। তারপর খ্রিস্ট ধর্ম রক্ষার নামে তাতে সৈন্য প্রেরণ করে
 


এটা সাম্রাজ্যবাদীদের কমন চরিত্র। অ্যামেরিকা একটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে তাকে সবসময় যুদ্ধের মধ্যে থাকতে হয়। এটাকে আরবীতে হারব বলে না, বলে সারিয়াহ। সারিয়াহ মূলত ভীতি সৃষ্টির জন্য শক্তিমত্তায় নিম্নশ্রেণির জাতির বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়। যুদ্ধাবস্থা থেকে অ্যামেরিকা মূলত দুটি জিনিস অর্জন করে।

১। ভীতি প্রদর্শন করে আনুগত্য।
২। অধিক শক্তিমত্তা অর্জন।
 

কিন্তু নাইন ইলেভেন হামলার পর এ বাস্তবতা পুরোপুরি উল্টে যায়। তারা এবার অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধে নেমে পড়তে বাধ্য হয়। ফলাফল দুটি পরাজিত (আফগানিস্তান ও ইরাক) ও একটি অমীমাংসিত (সিরিয়া) যুদ্ধ।

 

নাইন ইলেভেন হামলা যেই করে থাকুক না কেন, এটা যে পৃথিবীর জন্য একটা রাহমাহ হিসেবে এসেছে তা বলাই বাহুল্য। আমরা ইতোমধ্যেই সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ভিয়েতনাম, কিউবা, আফগানিস্তানে দেখে ফেলেছি এই সাম্রাজ্যবাদীদের চরিত্র। নাইন ইলেভেনের মাধ্যমে যদি তাদের ইকোনমিক পতন না ঘটত তাহলে পৃথিবীতে এখন কোনো কিছুই তাদের হাতের বাইরে থাকতো না এটা একটা বাচ্চাও বোঝে।  
নাইন ইলেভেন হামলার জন্য আল কায়েদার খরচ হয়েছিলো মাত্র ৫ লাখ ডলার।[১২] কিন্তু হামলার পর অ্যামেরিকার অবস্থা কী?
 

অ্যামেরিকা War on Terrorএ এ ২০১৮ অর্থবছর পর্যন্ত খরচ করেছে ৫.৬ ট্রিলিয়ন ডলার যার অধিকাংশই ঋণ।[১৩] Timeএর মতে, এ যুদ্ধে একজন আমেরিকান সোলজারের পেছনে অ্যামেরিকার খরচ হয় বছরে ৩.৯ মিলিয়ন ডলার।
 

লাদেনকে বের করতে অ্যামেরিকা খরচ করে তিন ট্রিলিয়ন ডলার যা তার ঋণের প্রায় ১৫%।[১৪]
 ২০১৬ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকা বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে ৩০৮টি ডিগ্রি প্রোগ্রাম খোলে Homeland Security ইস্যুতে। যার পেছনে খরচ হয় কয়েকশ মিলিয়ন ডলার। ২০০৩  সালে তারা জীবাণু অস্ত্র শনাক্ত করার জন্য Bio Watch Program শুরু করে, যা ২০১৫ সাল নাগাদ ১৪৯ বার ভুল সংকেত দেয়। এর পেছনে খরচ হয় ২০০ মিলিয়ন ডলার। ২০০১ এ অ্যামেরিকা Motion cencor camera স্থাপন করে প্রথমে ১ বিলিয়ন, পরে আরো ৫ বিলিয়ন খরচ করে। কিন্তু তা এতোই অকার্যকর যে তারা বাধ্য হয় ২০১১ সালে নামমাত্র দামে ইজরাইলের কাছে তা বিক্রি করে দিতে। ২.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে বর্ডারে স্থাপন করা রেডিয়েশন ডিটেক্টরগুলোও সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। ২০১১তে আরো ২৩০ মিলিয়ন ইনভেস্ট করার পরও কোনো লাভ হয়নি। FirstNet প্রোগ্রামের পেছনে অ্যামেরিকার খরচ ৪৭ বিলিয়ন ডলার। হামলার পর থেকেও Homeland Security র পেছনে অ্যামেরিকার খরচ ৪৫ মিলিয়ন ডলার যার প্রায় পুরোটাই জলে গেছে। ৬ বিলিয়ন খরচ করে তারা নিউ ইয়র্ক নিরাপদ করার জন্য পাতাল ট্রেন সিকিউর করে।  ২০০৩ সালে C Span কর্মসূচীর জন্য ১৮০ মিলিয়ন ডলার খরচও করে, যা এখনও চালুই হয়নি! তারা Counter Violent Extremism (CVE) হাতে নেয়, ৫০ মিলিয়ন ডলার খরচও করে। কিন্তু পুরো এজেন্ডাই ব্যর্থ হয়। হ্যাকার থেকে বাঁচতে ‘EINSTEIN’ সফটওয়্যার খোলে ১ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। কিন্তু তা ভেঙ্গে হ্যাকাররা ২৫ মিলিয়ন নথি চুরি করে।[১৫]

 

যার ফলশ্রুতিতে অ্যামেরিকা পৃথিবীর সবচেয়ে ঋণগ্রস্ত দেশের একটি।[১৬] আজ অ্যামেরিকা ন্যাটোর সাহায্য পায় না। ন্যাটো আজ বিভক্ত।


অ্যামেরিকা এখন হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে যে USSR কে পরাজিত করা তাদের সাম্রাজ্যবাদের কণ্টকহীন অভিযাত্রার সূচনা ছিলো না। Leon T Hadar বলেন,

 

“Like the Red Menace (USSR) of the cold war era, the Green Peril – green being color of Islam is described as a cancer spreading around the glove, undermining the legitimacy of Western values & threatening the national security of USA.”[১৭]

 

 

Reference:

১। Last Days of Pompeo- Lord Liton

২। US Foreign Policy; How 9/11 changed America: Four major lasting impacts by Mathew Green. KQED news, September  8, 2017.

৩। I knew bin laden- al jazeera documentary. Part 2.

৪। বারমুডা ট্রাইঙ্গেল ও দাজ্জাল- আসিম উমার।
৫। সত্যের সন্ধানে সে যুবক- মোল্লা দাদুল্লাহ।

৬। An enemy we created- Alex Strick Van Linschoten & Felix Kuehn.

৭। 9/11 attack- Dr. Zakir Naik.

৮। Interventions- Noam Chomskey.

৯। Fighting back: The war on Terrorism – From Inside The Bush White House by Bill Sammon.

১০। the Big Bamboozle- Philip Marshall.

১১। State Of Denial – Bob Woodward.

১২। CNN.com 9/11 panel. June 17, 2004.

১৩। Watson Institute International & Public Affairs. Cost of war. November 14, 2018.

১৪। www.theatlantic.com 7 may, 2011.

Post a Comment

2 Comments

  1. ভাই আপনি জানার কথা, ৯/১১ তালিবান+কায়েদার সম্মিলিত হামলা ছিলো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. জী ভাই জানা আছে। আসলে বিস্তারিত বলার সুযোগ নেই বলেই বিষয়টি স্কিপ করেছি।

      Delete