১৯৮৯ সালের ৯ ই সেপ্টেম্বর তাঁর জন্ম। পুরো নাম এ.কে.এম রেহান আহসান। বগুড়ার মর্নিং গ্লোরি কিন্ডারগার্টেনের, মিরপুরের ডন ভিউ কিন্ডারগার্টেনের ছোট্ট সেই রেহান। তারপর পা দিল ঢাকার বিখ্যাত গভ: ল্যাবরেটরী হাই স্কুলে। জীবনে কখনো তাকে ১ থেকে ৫ এর নিচে নামতে দেখিনি। গান করত খুব সুন্দর। আমার বড় ভাই রেহান। স্কুলজীবনে খুব ভাল বিতার্কিক ছিলো। কত অলম্পিয়াডে যে পুরষ্কার পেয়েছে তার ঠিকানা বা সংখ্যা কোনোটাই জানা নেই। খুব শান্ত স্বভাবের ছিলি তুই। মায়ের সোনার ছেলে- আসলেই তাই ছিলি তুই। তুই ছিলি বাবার গর্ব, আস্থার প্রতীক। ঢাকা সিটি কলেজে যখন পড়তিস তখন তোকে দেখেছি দিনরাত পড়তে। বুয়েটে পড়ার সুযোগ পেলি তাও ২১২ তম। তোর অবস্থানের তুলনায় আসলে প্রত্যাশা ছিল ১০০ জনের মধ্যে থাকবি। তাও তো চান্স পেয়েছিস।
আনন্দ, মারামারি, হাসি-ঠাট্টা, ঝগড়া দিয়ে ভরপুর ছিল তিন ভাই-
বোন আর মা-বাবা নিয়ে গঠিত আমাদের ছোট পরিবার। এইতো ২ মে তেও আমি তোকে ঘুষি মারলাম,
কিন্তু এই প্রথম তুই কোনো প্রতিশোধ নিলি না। শুধু বললি, “আমারও হাত আছে।” কেন নিলিনা ভাইয়া? অপূর্ণ কেন করলি আমাকে?
মনে পড়ে কী তোর, যখন পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বিগ ব্যাং এর পুনরাবৃত্তি নিয়ে কথা তুলেছিলাম, তখন ড.মুহম্মদ জাফর ইকবাল দ্বিমত পোষণ করেছিলেন। তখন তুই বলেছিলি দুজনের চিন্তাভাবনাই ঠিক। সাইন্স কংগ্রেসে গবেষণাপত্র জমা দেয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমারটা নির্বাচিতও হয়েছিল। শুধু তুই জানলি না। এই ৩ মেতেও তোকে দেখলাম। খেতে দেরিতে বসেছি। মেজ চাচার বাসায় দাওয়াত ছিল। মার উপর কি রাগটাই না করলি। সবার সাথে ইসলাম নিয়ে বিতর্ক করলি। খেতে ভালবাসতিস। তাই পেট ভরে খাওয়া শেষ করে আমাকে রেখে চলে গেলি। শেষবারের মত মাথা ঘুরালি। শেষবার তোকে দেখলাম। রাগী রাগী চোখে তাকিয়ে ছিলি। এই শেষবার তোকে জীবিত দেখা।
তুই সবসময় চাইতি আমি ডাক্তার হই, যা আমার মতাদর্শ বিরোধী। কিন্তু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এ কি আমি এভাবে যেতে চেয়েছিলাম? ৬ই মে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমারজেন্সি মর্গে যখন তোকে দেখলাম, আর পারলাম না। বুকটা ফাঁকা হয়ে গেল। ছোট স্ট্র্যাচারে শায়িত আমার লক্ষী ভাই, বল্টুস। তুই এত লম্বা আর মোটা যে তোর জায়গা হচ্ছিল না। মশা তোকে কামড়াচ্ছিল। মশার কামড়ের জন্য কী না করতিস, racket কিনেছিলি। আমার তখন racket টাকে খুব মনে পড়ছিল। তখনও সামান্য মশার কামড় নিয়ে আমার চিন্তা! যখন তুই বিজয়নগরের রাস্তায় গুলি খেলি হয়তো তখন, সেই দৃশ্য কল্পনায় আনলে বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে। জানিস ভাইয়া, আমার রাগ, জেদ আর কেউ নিয়ন্ত্রন করতে পারে না, এমনকি আমি নিজেও না । কারণ তোর মত করে এখন কেউ আমাকে ঠাণ্ডা মাথায় বোঝায় না। তোকে কোনোদিন দেখব না এই ব্যাপারটা কল্পনাতেও কখনো আনি নি। তুই সবসময় বলতি, “স্মরণী , তুই বাস্তবতা বুঝিস না, সারাক্ষণ স্বপ্নের জগতে বিচরণ করিস।” তোর কথা আজকে সত্যি মেনে নিলাম। আমি অপরিপক্ব। তাই এ স্বপ্নের জগতে থাকি। আমরা চার ভাইবোন, আম্মু- আব্বু, দিদি–দাদু সবাই। সুখেই হয়ত থাকি। বড়দিমণিকে তো তুই, আমি, সামা কেউই দেখিনি। শুধু গল্প শুনেছি, ছবিতে দেখেছি। আর তুই তো শেষ ঠিকানাও করে নিলি নওগা তে পারিবারিক কবরস্থানে, বড়দিমণি মুন এর পাশেই।
কেমন আছে দিমণি? আমাকে জানাবি না? কেমন করেই বা জানাবি? তোর আমার মধ্যে যে বিশাল ব্যবধান তা তো বেঁচে থাকতে আর কমে আসবে না। চল্লিশ দিন পার হয়ে গেছে, কিন্তু এখনো মনে একটা দগদগে ঘা। কোনোদিন শুকাবে কিনা জানি না। আর কোনোদিন তোকে দেখব না, ভাইয়া বলে ডাকব না, এখনো মেনে নিতে পারছি না।
তোর ফেসবুক
স্ট্যাটাস এর অংশগুলো পড়লাম, শেয়ার করলাম। তোকে দেয়া রিজভী ভাইয়ার পোস্ট পড়লাম। কম্পিউটার প্রকৌশলের
৩৮ রোলের সেই ছেলেটা মাটির সথে মিশে গিয়েছে। কলেজে শুভ্রা মিস যখন মানবদেহের অস্থি
পড়াচ্ছিল তখন ভাবছিলাম, এই তো ৫ বছর আগে আমার মত বয়সে,
আমাকে পাশে বসিয়ে কঙ্কাল বাসায় এনে হাড় গুলো বোঝার চেষ্টা করছিলি।
সাথে আমাকেও বুঝালি। দেখ, ভাগ্যের বিড়ম্বনায় আজ তুই নিজেই
কঙ্কাল হয়ে গেছিস।
মনে আছে তোর? আমাকে ২-৩ বার বুয়েটে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলি। কত কী খাইয়েছিলি। মনে নাই তোর? তোর সাথে রিক্সায় বসাটা খুব কষ্টের ছিল । কারণ তুইও মোটা, আমিও মোটা। আমার কাছে যে এগুলো শুধুই স্মৃতি। আমাকে যে তুই কচ্ছপ, পাখি, মাছ, ঘড়ি-কোনোটাই কিনে দিলি না। কে কিনে দেবে আর? ১৬ বছরের জন্মদিনে তোর দেয়া সেই থামি আর পরি না, যদি ছিঁড়ে যায়, আর যে তুই আমাকে দিবি না। ১৭ বছরের জন্মদিনে দেয়া সেই ইংরেজি কোরআন শরীফ প্রায়ই পড়ি, যত্ন করে রেখেছি। ১৮ বছরের জন্মদিনে দেয়া সেই “ডার্ট বোর্ড গেম” রেখে দিয়েছি। এটাই যে আমাকে দেয়া তোর শেষ উপহার। এসব এখন শুধুই স্মৃতি।
বুয়েট থেকে বাসায় ফিরে ব্যাগটা রাখবি, আর
আমাদের ২ জনের কমোড নিয়ে ঝগড়া, কে আগে যাবে? তুই ঢুকে গেলে আমি পড়ব তোর ব্যাগ নিয়ে। কী কী গোপন জিনিস আছে, খাবার আছে সব বের করব। আর সম্পা নালিশ দেবে। তুই বাথরুম থেকে চেঁচাবি।
তোর রক্ত মাখা ব্যাগসহ সব পড়ে আছে। রক্ত ধুয়ে দিলেও আঁশটে গন্ধ আছে। তোর DNA
এখনও লেগে আছে। তোর সেই লাল শার্টটা ঘুরে ফিরে দেখি। আতরের গন্ধে
যখন আমার আর সহ্য হতো না। সেই আতরের গন্ধ আর চশমা। কোথায় গেল, ভাইয়া?
তুই তোর কোন জিনিস কখনো গুছাতে পারতি না, হারাতিস, কিনতিস। এত জিনিস। ল্যাপটপ চালু করতে বুকটা ধক করে উঠল। তোর পাসওয়ার্ড যে আমি জানতাম তা তোকে বলি নি কখনো। বলে ফেললেই তো কেল্লাফতে। ল্যাপটপ নিয়ে আমাদের দুজনের কত মনোমালিন্য। বাসায় ২টা ল্যাপটপ, ১টা ট্যাব, ১টা কম্পিউটার পড়ে আছে। তুই শুধু নেই।
আমার ল্যাপটপ থেকে কিছু ছবি মুছে দিয়েছিলি কেন জানি না। স্মৃতি মুছে ফেলার জন্য কি? তাই কি কখনো হয়? বোকা কোথাকার। ১৮ বছর ২ মাস ১২ দিনের স্মৃতি কি এত সহজে মোছা যায়? এখন শুধু ফেসবুকে তোর ছবিগুলোই অবশিষ্ট। সত্যিই ভাইয়া তুই তৃতীয় মাত্রা থেকে দ্বিতীয় মাত্রা হয়ে গেছিস চোখের পলকে।
ভাইয়া তোর ২৩ তম জন্মদিনের কথা মনে আছে? তোর জন্য লুকিয়ে কেক কিনে আনলাম, তোকে সারপ্রাইজ দিলাম। তুই সারপ্রাইজড হলি না। ২৩ টা মোম জ্বালালাম।
তুই কিছুতেই কেক কাটবি না, জোর করে কাটালাম। আমি তখন
ভাবছিলাম যে প্যাকেটে তো ২৪ টা মোম থাকে, তোর যখন ২৫ বছর হবে তখন কি করব?
কিন্তু ভাগ্যের এই নির্মম পরিহাস কি অনুভব করতে পেরেছিল আমার
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়?
টাকাকড়ি কখনো নিজের কাছে রাখতে পারতি না। বই কেনা তোর একটা শখ
ছিল। কত যে বই তোর। সেদিন ইমরোজ ভাইয়া ট্রাঙ্ক – সুটকেসে করে
তোর সমস্ত বই নিয়ে গেল। অনেকক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করেছি নিজেকে। ভাইয়া চলে গেলে দরজা
আটকে কেঁদেছি। বই হারানোর দুঃখে নয়। তুই তো আর বই কিনবি না। ইমরোজ ভাইয়ার শেষ
কথাগুলো মনে পড়ছে – “এমন কিছু করো যাতে বইগুলো তোমাকে আবার ফিরিয়ে দিয়ে যেতে পারি।”
তাই যেন হয়। জানিনা আমার ভাগ্যে কি আছে। ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে
চাই না। কারণ ভাগ্যকে আমি নিজ হাতে নিয়ন্ত্রণ করি, অন্য
কেউ নয়।
গরিব মানুষকে দান করতে খুব পছন্দ করতিস। মনে আছে তোর? কোন মাছওয়ালার মাছ সারাদিন বিক্রি হয়নি বলে তুই ৫০০ টাকা দিয়ে ৪০ টা কই কিনেছিলি? আর সেই মরিচ খাওয়ার ঘটনাটা। রাস্তার বোম্বে মরিচ কিনেছিস। অথচ তুই কিনা টেস্ট করার জন্য অর্ধেকটা মরিচই খেয়ে ফেললি। তারপর রিক্সা থেকে ঝালের চোটে পরেই গেলি। সবকিছুই তোর কাছে এক্সপেরিমেন্ট ছিল, এমনকি নিজের জীবনটাও। খেতে খুব ভালোবাসতি। কারো দিকে তাকাবি না খাওয়ার সময়। হেলিকপ্টার কেনার শখ হলে ২০০০ টাকা খরচ করে কিনলি। ক্রিকেট খেলবি তাই পুরো ক্রিকেট সেট কিনলি। ব্যাডমিন্টন মামা কিনে দিল, হারালি আবার কিনলি। ১ ই মে তেই তুই আমাকে নিয়ে গেলি মাল্টি প্লান সেন্টারে। গিয়ে এ্যাডাপ্টর কিনলি।
নামাজের সময় হল। আমাকে দোকানে দাঁড় করিয়ে রেখে নামায পড়েছিলি। আচ্ছা ভাইয়া তুই কী তোর জীবনের শেষ ঈশার নামাজ পড়তে পেরেছিলি? শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সঃ)” পড়েছিলি?
তুই আমার সবচেয়ে বিশ্বাসী, কাছের বন্ধু ছিলি। মা তোর কাছে পড়তে বলতো। আর আমি ফাঁকি দিতাম। মনে পড়ে কী তোর? আমাকে ১১ দিনের মাথায় অংকসহ উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র বই এর ১২টা অধ্যায় শেষ করে দিয়েছিলি। রসায়নের ক্ষেত্রে তোর সাথে কারো তুলনা দিব না। কি করে যেন পড়াতিস, গেঁথে দিতিস ভিতরে। আর সেই কঠিন অংকগুলো দিয়ে বলতিস, “তুই কোন পর্যায়ে আছিস তা দেখবো?” উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের পুরোটাই বাকি। কে পড়াবে আমাকে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন? আর অঙ্কই বা কে দেখবে? কে বলবে আমাকে জ্ঞানের কথা? একবারও আমাকে দেখলি না? মনেও করলি না? জানি উত্তর দেবার সামর্থ্য তোর নেই। কিন্তু প্রশ্ন তো আমি করতে পারি।
তোর সেই সুসময়ের ধার্মিক বন্ধুরা কোথায়? গা ঢাকা দিয়েছে নাকি? এর নাম ইসলাম? ইসলাম শান্তির ধর্ম, সাহসিকতার ধর্ম, আনুগত্যের ধর্ম। কিন্তু তোর বন্ধুরা ইসলামের কোন পর্যায়ে পরে আমি জানি না। তারা একবার ও আসে নি। হলের তোর সমস্ত জিনিষ ফেরত দিয়ে গেছে। কে দিয়েছে বলতো? তোর সেই নাস্তিক বন্ধু ইমরোজ ভাইয়া, নাভিদ ভাইয়া, রাসেল ভাইয়া, রানা ভাইয়া। যাদের সঙ্গ তুই ধর্মের জন্য ছেড়েছিলি।
মার সাথে তোর সম্পর্ক আমার সাথে সম্পর্কের চেয়ে হাজার গুণ ভালো ছিল। মা তো সারাদিন কাঁদে। বাবা করে আফসোস। কি করে সান্ত্বনা দিব বল তো? আমার কথা না হয় নাই ভাব। মা-বাবার কথা ভাবলি না। বাবা অসুস্থ। কি করে সামলাবো সব? পড়তে বসলেও পড়ি না। তোর স্মৃতি নিয়ে নাড়াচাড়া করি। কবে ঠিক হবে জানি না। তবে জানি সময়ে সব সয়ে যায়। এই কঠিন সত্য আমাকে মেনে নিতে হবে। মেনে হয়তো নিব। কিন্তু মা কি পারবে? মা তোকে কত ভালোবাসে। বুঝলিও না।
সবচেয়ে আফসোসের ব্যাপার এই যে, তুই যে জন্য জীবন দিলি তা কী আদৌ কার্যকর হবে? নাকি কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যাবে?
জানিনা, তবে তোকে ১ টা সুখবর দেই। আগামী ১০ বছরের
মধ্যে ব্রিটেন মুসলিম প্রধান দেশ হবে। খুশী হয়েছিস তো?
ফেসবুকের এক
জায়গায় দেখলাম ২৫০০ মানুষ নাকি ওইদিন তোর মতো গুলি খেয়ে মারা গেছে? জানি না সত্যি কিনা। তবে তুই যে মারা
গেছিস সেটা আমি জানি। লাশ পাওয়া গেছে ১০-১৫ টা। ভাগ্যিস তোর লাশটা পাওয়া গেছে। তোর
জানাজা হয়েছে, কবর হয়েছে। বাকিদের ভাগ্যে তো ওটাও জোটে নি।
জানিস, কখনো মনে হয়, তোকে যারা মেরে ফেলেছে তাদের খুঁজে বের করে প্রতিশোধ নেই। কিন্তু আমি যে পারিবারিক শেকলে, সামাজিক শেকলে বাঁধা। আমি হয়তো ব্যর্থ কিন্তু হয়ত কেউ আসবে যে প্রতিশোধ নেবে। আল্লাহকে বিশ্বাস করি। তাঁর উপরেই ছেড়ে দিলাম ।
তোর মৃত্যুর জন্য কাকে দায়ী করব? সরকার, ভাগ্য না পরিস্থিতি? পরিস্থিতিকেই দায়ী করি।
পরিস্থিতিই হয়তো তোকে কেড়ে নিয়েছে আমার থেকে। ভাইয়া তোকে যে কথা কখনো বলিনি তা বলব,
শুনতে হয়তো পারবি না তাও বলব, তোকে অনেক
ভালোবাসি। ভাইয়া তোকে অনেক মিস করি। প্রতিটা ক্ষেত্রে আর তোর সাপোর্ট নেই। ক্ষমা করিস
আমাকে তোকে বাঁচাতে পারি নি বলে। তোকে হয়তো আর কোনোদিন ডাকতে পারব না, কথা বলতে পারব না, গল্প করতে পারব না। কিন্তু
তোর স্মৃতিগুলো শুধু থাকবে।
জানিস সামা কী বলে? তোর কবর দেখে বলে, “মা,
ভাইয়া ধুলার মধ্যে শুয়ে আছে । মা, ভাইয়া
আর আসবে না।” ৫ বছরের মেয়ে কী এমন বুঝে কাঁদে জানি না, তোর
সাথে তো সামার বয়সের পার্থক্য ১৮, আর আমার সাথে ১২। ১৮
বছর ধরে তোকে দেখলাম, জানলাম, কিন্তু
আর কখনো দেখব না ভাবলেই খারাপ লাগে। সব সামলে নেবো আমি। কি অদ্ভুত ভাগ্য আমার তাই
না? সামা হওয়ার আগে পেলাম ছোটো হওয়ার আদর। তারপর হলাম
মেজো। আর এখন বড়। বড় হতে চাইনি কখনো। ছোটোই থাকতে চেয়েছি। মেজো হওয়া নিয়ে আমার সেই
কষ্ট টা তুই ই কাটিয়ে দিলি। অনেক দায়িত্ব দিয়ে গেলি? পারবতো, ভাইয়া? তোর টেকলি যে এখন আবার একা হয়ে গেলো?
আমাকে যে আর তুই টেকলি বলবি না। আর আমিও তোকে বলব না বল্টুস। যেই
নিয়্যতে জীবন দিয়েছিস সেই নিয়্যত যেন পূর্ণ হয়। আল্লাহ যেন তাই করেন।
লেখক: ফারিয়া স্মরণী ভাষা
উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষ
হলি ক্রস কলেজ
৫ই মে তাগুত হাসিনা সরকারের সন্ত্রাসীবাহিনীর গুলিতে বুয়েটের ভাই
শহীদ রেহানের বোন ।
2 Comments
বাকরুদ্ধ!
ReplyDeleteআমিও
Delete