চট্টগ্রাম যেদিন ছেড়ে আসি, সেদিন অনেক অনেক কেঁদেছিলাম।
অনেক। ভাইদের জন্য, পরিবারের জন্য, চট্টগ্রামের জন্য। মনে পড়ে হাসান স্যারের কোচিং
এর কথা। এক ছেলে এসে বললো সে আমাদের বেঞ্চে বসতে চায়। আমিও বাঁদরামি করে একদম এক সাইডে
দিলাম। সেই থেকে শুরু। কতদিন টেম্পুর পিছনে ঝুলে ঝুলে যাওয়া, ডিবেট সার্কিট ও ইসলাম
নিয়ে জম্পেশ আড্ডা, চুরি যাওয়া ফোন আদায়ের মাস্টারপ্ল্যান- কতকিছুই না করেছি এ
Adil ছেলেটার সাথে।
ক্লাসের একদম ডান সাইডে নাদুশ নুদুশ একটা ছেলে
বসতো। অতো ঘাটাতাম না। ম্যাডামের ছেলে বলে কথা। মাঝেমধ্যে গোলাম আযমের জানাজা ও ইসলামপন্থার
গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে হিটেড বিতর্ক হয়ে যেতো। মারতে পারলে যেন শান্তি! হাউজ টুর্নামেন্টে
ওদের বাসায় যাওয়ার সুবাদে সম্পর্ক অনেক ভালো হয়ে যায় সবার সাথে- ম্যাডাম, আঙ্কেল, ভাইয়া,
আপু আর গোলগাল ছেলেটা। ডিবেট সার্কিটের সবার আদরের পাত্র এ আর কেউ নয়- আমাদের
Rafin।
নাঈমুরকে কে না চেনে? ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার থেকে
নিয়ে আমার সব ক্রাইম, ভালো কাজ, ক্যালেন্ডারের আইডিয়া, টি শার্ট বিজনেসের প্ল্যান,
হসপিটাল, অনুবাদ, গোপন ষড়যন্ত্রসহ রাজ্যের যত কুকর্ম আছে, সফল হোক বা বিফল- সবকিছুর
সঙ্গী এ ছেলে। দুনিয়ার সব কামলা খাটাই এ ছেলেকে দিয়ে, সেও কম যায় না। শেষ যখন চট্টগ্রাম
ছেড়ে আসি, প্রথমবারের মত জড়িয়ে ধরে ও আমাকে। কান্না শুরু হয়েছিলো তাই টেম্পু থেকেই।
কিছু সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়ে যাওয়াটা অনেক বেশি কষ্টের।
অনেক অনেক দিন পর সবার দেখা। অল্প কিছু সময়ের জন্য।
মনে হচ্ছে কিচ্ছু বলতে পারিনি, শুনতে পারিনি। আবার দেখা হবে পুরো একটা দিন নিয়ে। সেদিনও
মনে হচ্ছে না যথেষ্ট হবে। হয়তো আগের মতই দিনরাত আড্ডা, যমযমের চা, টেম্পুর পিছে বাঁদরঝোলা
হয়ে কথা বলতে না পারলে কোনোদিনই তৃপ্তি মিটবে না। কোনোভাবেই না।
আর হ্যাঁ ভাই, আমি বাইট্টা অনেক।
0 Comments