Ad Code

Responsive Advertisement

মুসলিম অনুভূতিতে হাজিয়া সোফিয়া



[১]

সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহ রাহিমাহুল্লাহ।

১৪৫৩ সালে মুসলিম উম্মাহর ৪২ বার চেষ্টার পর তিনি বিজয় করলেন কনস্টান্টিনোপল। সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহ রাহিমাহুল্লাহ হলেন সে সেনাপতি যার ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সা বলেছেন,

"অবশ্যই তোমরা কনস্টান্টিনোপল জয় করবে। কতই না উত্তম হবে সে সেনাদল! কতই না উত্তম হবে তাদের সেনাপতি!" [মুসনাদে আহমদ]


নিঃসন্দেহে কতই না উত্তম ছিলেন আমাদের সুলতান! কতই না উত্তম ছিলো তার সেনাদল!

সুলতান কনস্টান্টিনোপলের মাটিতে পা রাখলেন। এই সেই কনস্টান্টিনোপল যেখানে হামলা করেও সফল হননি অন্যতম মহান সাহাবি মুয়াবিয়া রা.। এই সেই কনস্টান্টিনোপল যার আগমন পথে সেই আইয়ুব আনসারির কবর যিনি বলে গিয়েছিলেন,

আমাকে এখানে কবর দাও। যেন রাসূলুল্লাহর ভবিষ্যদ্বাণী সফল করা সৈন্যদল আমার কবরের উপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে কনস্টান্টিনোপল জয় করে।

নিশ্চয় রাসূলের সা. ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছে! নিশ্চয় আইয়ুব আনসারির আশা পূর্ণ হয়েছে!

সুলতান কনস্টান্টিনোপলের নাম রাখলেন ইসলামবুল। একে বানালেন রাজধানী। যেহেতু জি হাদের মাধ্যমে বিজয় হয়েছে, তাই তিনি কাফিরদের প্রধান চার্চ, প্রধান রাজনৈতিক কার্যালয় আয়া সোফিয়াকে মুসলিমদের আওতায় নিয়ে নিলেন। একে মাসজিদ বানালেন। যেখানে দিনের পর দিন চলতো কুফরির আচার, আল্লাহর পুত্র বানিয়ে দেওয়া হতো আল্লাহর একজন শ্রেষ্ঠ নবীকে, আল্লাহর স্ত্রী বানিয়ে দেওয়া হতো একজন শ্রেষ্ঠ কুমারি নারীকে যাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি। তারপর সেখানে চললো কেবল এক আল্লাহর ইবাদাহ। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হবে।


[২]

একদিন...

একদিন মুসলিমদের শেষ আশ্রয়- খিলাফাহর পতন ঘটলো। মুসলিমদের মধ্য থেকেই উঠে এলো ইসলামের প্রকাশ্য শত্রু মুস্তফা কামাল পাশা। তাকে আতাতুর্ক বা জাতির পিতা বলা হতো। অস্ত্রের জোরে ও ফিরিঙ্গি প্রভুদের আশীর্বাদে এ মুর্তাদ ইসলামকে মুছে দিতে শুরু করলো তুরষ্কের মাটি থেকে। আযান পর্যন্ত সে পালটে দিলো। আরবী শব্দ পাল্টাতে লাগলো। মাহমুদ হলো মেহমেত, আহমাদ হলো আহমেত। পশ্চিমা ক্যাপ বাধ্যতামূলক করলো যেন সিজদাহ দেওয়া না যায়।

উলামায়ে কিরামের উপর নেমে আসলো অবর্ণনীয় নির্যাতন। তারই ধারাবাহিকতায় আল্লাহর রাসূলের ভবিষ্যদ্বাণীর স্মৃতি, আইয়ুব আনসারির মৃত্যুর স্মৃতি, মুয়াবিয়া রা.র চেষ্টার স্মৃতি, সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহ রাহিমাহুল্লাহর বিজয়ের স্মৃতি আয়া সোফিয়াকে ১৯৩৫ সালে সে বানিয়ে দিলো যাদুঘর। যেখানে চলতো এক আল্লাহর ইবাদাহ, সেখানে এখন চললো শিরক ও নাস্তিকতার উৎসব, মূর্তি-নাপাকি দিয়ে তারা অপবিত্র করলো আল্লাহর ঘর।


[৩]

তুর্কি সরকার অনেকদিন থেকেই আয়া সোফিয়াকে আবার মাসজিদ বানানোর আলোচনা করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে তারা এর প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করে এবং বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত ঐতিহাসিক আয়াসোফিয়া-কে পুনরায় মসজিদে রূপান্তরের পক্ষে রায় দিয়েছে দেশটির শীর্ষ আদালত। দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকা মামলার রায়ে আয়া সোফিয়া-কে জাদুঘরে রুপান্তর সংক্রান্ত আইনকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আয়া সোফিয়া-কে মসজিদে রুপান্তর করতে আইনগত কোনো বাঁধা থাকলো না।
আজ বুধবার ( ৮ জুলাই) তুরস্কের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইয়েনি শাফাক’-এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্বাস করুন, যখন আমি শুনলাম যে আয়া সোফিয়াকে আবার মাসজিদ বানানো হবে, তখন আমি চোখে পানি চলে এসেছিলো। ইসলাম ফিরে আসছে তুরষ্কে! আমার মনে হচ্ছিলো যেন আমরা জেরুজালেম ফিরে পেয়েছি। আল্লাহ রহম করুন তুরষ্কের উপর, তুরষ্কের কর্তৃপক্ষদের উপর। আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না, আয়া সোফিয়ায় আবার সালাত হবে! আবার সেখান থেকে ভেসে আসবে আল্লাহু আকবার ধ্বনি! সেখানে আবার ফিরে ফিরে আসবে সুলতানের নাম, রাসূলুল্লাহর সা ভবিষ্যদ্বাণী। আয়া সোফিয়ায় আমি একটাবার সিজদাহ দিতে চাই। সুলতানের পায়ের ধুলো যেখানে পড়েছিলো সেখানে আমিও একটাবার হাঁটতে চাই। রাসূলুল্লাহর ভবিষ্যদ্বাণী নিজের চোখে দেখে আসতে চাই।


হে আতাতুর্ক! আমরা আল্লাহর ওয়াদা সত্য পেয়েছি। তুমিও কি পেয়েছো?

 

Post a Comment

0 Comments